আইন-ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ দাশগুপ্তর প্রধান কর্মস্থল হাওড়া দেওয়ানী আদালত। আইনব্যবসার ফুরসতে মন্দির- ভাস্কর্য, রহস্য সাহিত্য, ইতিহাস ও সত্যজিৎ চর্চায় মগ্ন থাকা আর শখের টানে এই বিশাল দেশের আনাচে-কানাচে পরিব্রাজনে বেরিয়ে গিয়ে... পড়তে চেষ্টা করেন কোনও ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থানে। প্রসেনজিৎ-এর ধারণা, একমাত্র এইরকম কোনও জায়গাতেই মানসিক ভাবে হলেও কাল-ভ্রমণ সম্ভব। তাই এমন কোনও জায়গা আর সেখানকার সৌধ ও ইতিহাস পছন্দের হলে একই জায়গায় বারংবার গিয়ে পড়তেও আপত্তি নেই তাঁর। এইভাবে বেড়ানোর ফলাফল হিসেবেই বুঝি লেখে ফেলেছেন প্রত্ন-ভ্রমণ বিষয়ক কয়েকটি বই, যেমন 'খাজুরাহো', 'মান্ডু', ওরছা', ইলোরা', 'ভারতের মন্দির ভাস্কর্যে সমাজ ও সংসার', 'রহস্যের তাজমহল', 'সাচী', 'প্রত্নতথ্য', কোনারকের ভাস্কর্য', 'প্রত্নভাস্কর্যে দেবদেবী', 'চিদাম্বরমের নটরাজ', 'বাদামী আইহোল পট্টদকল' ইত্যাদি। এছাড়াও লিখেছেন সত্যজিৎ রায়ের সাহিত্য সম্পর্কে আলোচনা ও ব্যাখ্যামূলক একাধিক বই, আগাথা ক্রিস্টি এবং অ্যালফ্রেড হিচককের জীবন ও কর্মকাণ্ড বিষয়ক দুটি আলাদা বই এবং গোয়েন্দা সাহিতা বিষয়ক আলোচনার খানকতক বই। প্রসেনজিৎ এর প্রথম অজন্তা ভ্রমণ স্কুলের নীচের দিকের ক্লাশের ছাত্রাবস্থায়, বাবা-মার হাত ধরে। তার পর গিয়েছিলেন কলেজের ছাত্র থাকাকালীন। সেবার গুহার প্রবেশপথের বিপরীতে সরকারী রেস্ট হাউসে কয়েকরাত কাটিয়ে অত্যন্ত বিশদে অজন্তা গুহার পাথর-খোদাই ভাস্কর্য আর চিত্রকলা দেখে আসার সুযোগে আহরণ করেন আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা যেমন অজন্তা দেখার, তেমন সন্ধ্যার পর গুহার পারিপার্শ্বের জনহীন পরিবেশ উপভোগের আর অনুভবের। তার কয়েকবছর পর থেকে ওই এলাকায় বসবাস বা বাইরের গাড়ি আসা বন্ধর সঙ্গে আরও অনেক বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল দূষণের হাত থেকে গুহাচিত্রগুলি বাঁচাতে। এব পরও একাধিকবার অজন্তা গিয়েছেন লেখক আর বহুবার অজন্তা ভ্রমণের পরিণাম এই বইটি।