এতকাল বাসবিহারী বসুর জীবনী লেখা হয়েছে কিছু মিথ আর অতিরঞ্জিত কাহিনি নিয়ে। তাঁর সংগঠন মূলত উত্তর ভারত জুড়ে ছিল বলে বাংলায় তথ্যভিত্তিক জীবনী আর ইতিহাস চর্চা হয়নি। অথচ তিনিই হলেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির প্রতিষ্ঠাতা, যে ফৌজিদের লড়াইয়ে মণিপুরের ময়রাঙ দখল হলে ব্রিটিশ শাসকরা বুঝতে পারেন ফৌজিরা আর তাঁদের তাঁবে থাকবে না। ভারতবর্ষ থেকে পাততাড়ি গুটোতে হয়। কিন্তু রাসবিহারী বসুর মনে ফৌজ গড়ে লড়াইয়ের একেবারে নতুন ধারা কীভাবে এল? রাসবিহারী বসুর জ্যাঠতুতো দাদার ডায়রি পড়ে প্রথম জানতে পারা যায়, ঠাকুর্দার মুখ থেকে গল্প শুনে মগধের রাজা চন্দ্রগুপ্তের মতো গুপ্তচর হিসাবে ফৌজে ঢুকে তাঁদের হাত করে লড়াইয়ে নামিয়ে সাহেবদের তাড়ানোর পথ তাঁর মাথায় ঢুকে যায়। এরপর চন্দননগর থেকে কলকাতার মর্টন স্কুলে পড়তে এসে গড়ের মাঠে সেপাইদের কুচকাওয়াজ দেখে ঠিক করেন কেল্লায় ঢুকে ফৌজি হতে হবে। কিন্তু বাঙালি বলে সুযোগ না মেলায় বাড়ি ছেড়ে পালান। এরপর তাঁর বাবা ১৯০৪ সালে তাঁকে শিমলায় নিয়ে যান। তারপর প্রথমে ধরমপুরে ও পরে কসৌলিতে সরকারি চাকরি করে শেষমেষ দেহরা দুনে ইম্পেরিয়াল ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটে স্থায়ীআস্তানা গাড়েন। ১৯০৭ সালে পঞ্জাবে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হতেই ইউ.পি.আর পঞ্জাবে গড়ে তোলেন বিপ্লবী দল। এরমধ্যে ১৯১১ সালে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরানোয় বদলা নেওয়ার উদ্যোগ নেন। ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর বড়লাট হার্ডিঞ্জের শোভাযাত্রায় বসন্ত বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে বোমা ছুড়ে একেবারে উধাও হয়ে যান। তারপর চন্দননগর থেকে বারাণসীতে পালিয়ে গিয়ে সেখানে থেকেই ভারতীয় ফৌজিদের দলে টেনে শুরু করেন ভারতীয় সেপাইদের নিয়ে দ্বিতীয় মহাবিদ্রোহের বিশাল প্রস্তুতি। তাঁর কর্মকাণ্ডের সবটাই পঞ্জাব, দিল্লি আর ইউ.পিতে। প্রায় ৮ বছর এইসব জায়গায় ঘুরে তথ্য জোগাড় করে উপন্যাসের আঙ্গিকে এই অজানা ইতিহাস।
APARAJEYA RASBEHARI
[1st & 2nd Volume]
A Historical Novel on Rasbehari Basu and India's Armed Struggle 1904-1915