ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের একজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার তাঁর কর্মজীবনের আত্মকথা দুই মলাটের মধ্যে লিপিবদ্ধ করেছেন- এই সামান্য একটি বাক্যে বইটি সম্পর্কে বললে তা নিঃসন্দেহে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পশ্চিমবঙ্গ অরণ্য বিভাগের আধিকারিক হিসেবে সুদীর্ঘ ৩৫ বছর ব্যয় করেছেন তিনি। একজন সহ-বনপাল থেকে শুরু করে রাজের প্রধান মুখ্য বনপাল পর্যন্ত তাঁর এই সাড়ে তিন দশকের লম্বা যাত্রাপথ আসলে এ রাজ্যের বন ও অরণ্য সম্পদ সংরক্ষণে এক অতি শুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বন-জঙ্গল-বাস্তুতন্ত্র বাসে রুখতে বিশ্বব্যাপী প্রতিশ্রুতির অংশীদার হয়ে যে সময় নিজস্ব নতুন বন সংরক্ষণ আইন চালুর ভাবনাচিন্তা শুরু হয় আমাদের দেশেও, সেই সন্ধিক্ষণেই প্রথাগাত অ্যাকাডেমিক কেরিয়ারের হাতছানি উপেক্ষা করে ফরেস্ট সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন এই মেধাবী তরুণ। পরিবর্তিত সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টিভঙ্গির ফলে এ রাজ্যের বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনায় এবং বন্যপ্রাণ, জীববৈচিত্র্য ও বনজ সম্পদ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পরবর্তী তিন দশক বরে যে সব বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও অভিযোজন ঘটে সেসবের প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন তিনি। একের পর এক নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া এবং সেগুলিকে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে তাঁর অভিজ্ঞতার খুলি। এই বই তাই স্রেফ আত্মকথন নয়, পশ্চিমবঙ্গে বন সংরক্ষণের ইতিহাসে একটি মূল্যবান দলিল হয়ে থাকবে।