কাঁচরাপাড়া-র মানুষজন বলে এর আদত নাম কাঞ্চনপল্লী। আর পাঁচজন বলে-ফালতু কথা! কাঁচরা চাপা দেওয়ার কায়দা যত! বছরে একটা দিন কিন্তু ড্রেনের কাঁচরা ঘেঁটে সোনার গুঁড়ো খোঁজার রীতি এখনও রয়ে গেছে কুঞ্জ বসু রোড জুড়ে। এ জনপদের কীই বা আছে যা তাকে বিশিষ্ট, বিখ্যাত করবে? শুধু মহাকাব্যের উপাদান শরীরে নিয়ে কিছু চরিত্র ডুবসাঁতার দেয় এই মফস্সলি আখ্যানে, এই সাতপাঁচাপাঁচি গল্পে সামান্য নাটকীয়তা যুক্ত করে। যেমন আমার সেই স্কুলছুট বন্ধু সুবোধ, মরে যাওয়ার আগে তাবৎ মাস্টারমশাইদের যে একবারও জিগ্যেস করতে পারেনি- "যদি বল কেন...", বা মধ্যবিত্ত সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে অনড়, জেদি, একা রামদুলাল প্রসাদ, যিনি আসলে সংগঠিত রামদুলালেরই ছায়া ছিলেন। কিংবা অপরের ভালো থাকার প্রার্থনা উচ্চারণে ক্লান্তিহীন সেই বুড়ি মানুষটা... যিনি কাঁথার সঙ্গে এক সুতোয় সেলাই করে দিয়ে গিয়েছিলেন গোটা পাড়াটাকেই-এই প্রান্তকথা ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করে সেই সেলাইয়ের দাগটুকু অন্তত বেঁচে আছে কিনা।