সেই কত শত বছর আগে ব্যাথিত লাল বটফল খেয়েছিল এক শালিখ, উড়ে এসে বসেছিল সুতানুটির গঙ্গার ধারে একটি খেজুরগাছে। বিনির্গত বটের বীজ অঙ্কুরিত হয়ে খেজুরগাছটিকে জড়িয়ে বেড়ে উঠল। একদিন সেই বটের ছায়ায় আপিস খুলে বসল এক ভিনদেশি বণিক। কালে কালে গড়ে উঠল মৃত শালিখের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো মহানগর। এভাবেই ছোটনাগপুরের জঙ্গলমহলে ভ্রমণ নিয়ে একটি ছোট্ট আখ্যান, তার ভাঁজে ভাঁজে সুপ্ত ভাবনার বীজ শিকড় ডালপালা ছড়িয়ে দিয়ে তৈরি হল একটি সম্পূর্ণ নতুন লেখা। গিটার, ক্যামেরা আর রুকস্যাকে রামের বোতল নিয়ে বাংলার পশ্চিম প্রদেশে যাত্রা করেছিল তিন যুবক। তাদের এজমালি স্মৃতি, এক রহস্যময় ডায়েরি, পুরোনো দিনের ফোটোগ্রাফ, আত্মজীবনী ও প্রতিবেদনের মধ্যে দিয়ে এ এক বিস্তৃত সময়কালের প্রত্নখনন-যেখানে মন্বন্তর, দেশভাগ, সত্তরের জ্বলন্ত দশক, ঔপনিবেশিক বাঙালির আত্মপরিচয় নির্মাণের কাল উন্মোচিত হয়েছে থরে থরে, খুলে এসেছে আশ্চর্য সব সুড়ঙ্গ আর সিঁড়ি, শোনা গিয়েছে অনেকগুলি কণ্ঠস্বর। কিংবা হয়তো একটিই স্বর-এক হারিয়ে যাওয়া, ফিরে ফিরে আসা সময়ের। স্মৃতিকথা? আখ্যান? আঞ্চলিক ইতিহাস? হয়তো এই লেখাটির সঙ্গে তুলনা চলে মিশ্রমাধ্যম ইন্স্টলেশান শিল্পের।