'কীর্তনকথা' কীর্তন বিষয়ক গবেষণাধর্মী গ্রন্থ। চৈতন্যোন্ডর ও চৈতন্য পূববর্তী বাংলার কীর্তন চর্চা ও কীর্তনের ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য নির্ভর লেখায় সাজানো এই গ্রন্থ। প্রসঙ্গক্রমে উঠে এসেছে বাংলার বাইরে বেশকিছু রাজ্যের কীর্তনের নানা ধারার কথাও। প্রায়োগিক ও উপপত্তিক বিষয় নিয়ে লিখেছেন বহুগুণীজন, যাঁরা নিজস্ব কর্মজগতে সম্মানিত। নানা প্রকারের ফুল দিয়ে একটি সুতোয় কীর্তনের মালা গাঁথা হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য সৃষ্টির মধ্যে বৈষ্ণব পদাবলী ও কীর্তন সংগীত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলার সংস্কৃতিতে বৈষ্ণব সমাজের উল্লেখযোগ্য অবদান ও শ্রীচৈতন্যদেবের নেতৃত্বেই প্রথম বাংলার নবজাগরণের সূচনা হয়েছিল বলা যায়। সেই প্রেক্ষাপটও প্রাসঙ্গিকভাবেই উঠে এসেছে কীর্তনকথা গ্রন্থে। উজ্জ্বল জ্যোতিষ্করাজির সমাবেশ ঘটেছিল তৎকালীন সময়ে। চৈতন্যপূববর্তী সময়ে কবি জয়দেব বড়ু চন্ডীদাস ও বিদ্যাপতিরা যেমন অসাধারণ পদ সৃষ্টি করেছিলেন, তেমনি চৈতন্য সমসাময়িক ও পরবর্তী সময়ে নরোত্তম ঠাকুরসহ বহু পদকর্তাদের কাহিনিও চিত্রিত হয়েছে লেখায়। কীর্তনগানে তাল-ছন্দ এবং শ্রীখোল বাদ্য নিয়ে বহু অজানা তথ্যের সম্ভার রয়েছে এই গ্রন্থে। সাহিত্য ও সংগীতপ্রেমীদের কাছে কেবল নয়, সংগীত গবেষক থেকে সাধারণের কাছেও এই গ্রন্থটি গ্রহণীয় হবে বলে আশা রাখি।