"কলকাতা ছাড়ছি- বেলা চারটের সময় ট্রেন। সকালবেলা খুব দেরি করে ঘুমের থেকে উঠলাম। আজ কারুর কাছে যেতে হবে না-কোনও চাকরি খুঁজতে হবে না-কোথাও গিয়ে ঘোরাঘুরি করবার দরকার নেই আর। বিছানায় বসে একটা কথা শুধু ভাবছিলাম: এই কলকাতায় কবে আবার ফিরে আসি, কে জানে: ডায়াসেশন কলেজের সেই মেয়েটির সঙ্গে একবার দেখা করে গেলে পারতাম- মেয়েটি, অবিশ্যি, অপরিচিতা নয়; ছ-বছর ধরে তার সঙ্গে চেনাশানো কথাবার্তা চিঠিপত্র আলাপ- তারপর দু-বছর ধরে দু- জনের মুখ বন্ধ। এই একই কলকাতা শহরের দুই প্রান্তে দুই জনে আছি- অথচ সে যদি পিকাডিলিতে থাকত, আর আমি থাকতাম দক্ষিণ আফ্রিকায়, তা হলেও দু-জনের মধ্যে ব্যবধান এর চেয়ে বেশি হত না। মাঝে-মাঝে দু-একখানা কার্ড প্রত্যাশা করেছি বটে!-যদি-বা মুদ্রাদোষে সে লিখে ফেলে। লিখে ফেললে মন্দ হত না; দু-জনের ভিতর আবার একটা সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারত। কিন্তু, আমিও খুব সংযমের পরিচয় দিয়েছি। এ দু-বছরের ভিতর আমিও একখানা কার্ড অব্দি লিখতে যাইনি তাকে। কিন্তু, আজ তবু, বনলতাকে একখানা চিঠি লিখতে ইচ্ছা করছিল। লিখলে আজই সে পাবে; তারপর উত্তরের জন্য দু-এক দিন অপেক্ষা করা যায়-"