লেনিন তাঁকে বলতেন 'কবিতার গুন্ডা'। অথচ তিনি ছিলেন লেনিনে নিবেদিত প্রাণ। আর সমাজতন্ত্রেও। মায়াকোভস্কি মনে করতেন একজন 'জনগণের কবি'-কে হতেই হবে কবিতা-কারখানার শ্রমিক। তাঁর কবিতার মতোই স্বভাবেও তিনি বিদ্রোহী আর বেপারোয়া, কবিতা পড়তে পড়তে টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে পড়তেন, অথবা ছিঁড়ে কুটিকুটি করে উড়িয়ে দিতেন কবিতার পৃষ্ঠা। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হল লেনিন, সমাজতন্ত্র আর দেশপ্রেম নিয়ে কবিতার নির্মাতা মায়াকোভস্কিকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর তাঁর প্রেমের কবিতায়। সেখানে তাঁর প্রেম প্রায় আত্মকেন্দ্রিক উন্মাদনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। স্ববিরোধ? নয়তো যে মায়াকোভস্কি য়েসিয়েনিনের আত্মহত্যার সমালোচনায় দীর্ঘ কবিতা লেখেন, তিনি নিজেই কেন বেছে নেবেন নিজেকে হননের পলায়নী পথ? আসলে মায়াকোভস্কির কবিতাকে বুঝবার জন্য তাঁর কবিতার প্রেক্ষাপটকে বোঝাটা খুবই জরুরি। সেকথা মাথায় রেখেই এই সংকলনটির নির্মাণ। বর্তমান বইটি শুধুমাত্র অনূদিত কবিতাসংগ্রহ নয়, প্রায় সবক'টি কবিতার প্রেক্ষিত এবং কবির জীবননাট্য নিয়ে ভ্লাদিমির মায়াকোভস্কির ওপর একটি পূর্ণাঙ্গ কাজ। এর মধ্যে মায়াকোভস্কির দীর্ঘতম কবিতা 'প্লাদিমির ইলিচ লেনিন' এই প্রথম মূল থেকে অনূদিত হয়ে আলাদা উল্লেখের দাবি রাখে। প্রতিটি কবিতা, এবং আলোচিত যাবতীয় অনুষঙ্গ, রুশভাষা থেকে অনুবাদ ও আহরণ করেছেন বিশিষ্ট অনুবাদক অরুণ সোম।