Magnapashan
Magnapashan
খ্রিস্টজন্মের দুশো সত্তর বছর আগে মগধের সিংহাসনে অভিষিক্ত হয়েছিলেন বিন্সার-পুত্র অশোক। ধর্মরাজ্য স্থাপনের সংকল্প নিয়ে মৌর্যসম্রাট প্রিয়দর্শনের সম্রাট অশোক প্রিয়দর্শী হয়ে ওঠার সে অনুপম গাথা ভাম্বর করেছে ইতিহাসের পাতা। কিন্তু সে পৃথক প্রসঙ্গ। অশোক বিন্দুসারের কোনো অখ্যাত রানির পুত্র। মাতৃকুলে ছিল না রাজরক্তের কৌলিন্য। কোনোমতেই তিনি হতে পারেন না পিতার রাজ্যের নৈসর্গিক দাবিদার। সম্রাট বিন্দুসার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী চয়নও করে যাননি। সেক্ষেত্রে সর্বার্থেই তাঁর অগ্রমহিষীর পুত্র সুসীমের সিংহাসনে বসবার কথা। অথচ চার বছর পরে অভিষেক হয়েছে অশোকের। কীভাবে জ্যেষ্ঠভাতা সুসীমকে অতিক্রম করে কনিষ্ঠকুমার সিংহাসনে আসীন হলেন, তা আজ বিস্মৃতির অন্ধকারে। ইতিহাস ঐ চতুর্বর্ষব্যাপী অশান্ত ঘটনাপঞ্জির কোনো বিশ্বস্ত বয়ান সঞ্চয় করে রাখেনি। হিরণ্ময় নৈশব্দ্যে মূক হয়ে আছে মহাকালখণ্ডটি। দু- প্রান্তের আলোকিত সূত্রগুলির ঐতিহাসিক গ্রন্থিটি অদৃশ্য এক অপার্থিব অন্ধকারে। কিন্তু শিলাকীর্ণ অক্ষরগুলি যে আজও রয়ে গেছে। দুই সহস্রাব্দীরও বেশি সময়ের শীত-গ্রীষ্ম ঝঞ্ঝা-বৃষ্টি পেরিয়ে সেগুলি পৌঁছে দিয়েছে সুদূর অতীতের কিছু অকপট বার্তা। জড় পাথরের মাঝে উন্মোচিত হয় সুদূর অতীতের আলোকিত ইতিহাস। কোনো এক প্রিয়দর্শী রাজার হৃদয়মোক্ষণ করা আত্মোপলব্ধ জীবনদর্শন। এক দিগবিজয়ী সম্রাট-কথিত অনাহত শান্তির বাণী। বহু ভ্রাতৃরক্তে হাত রঞ্জিত করে সিংহাসনে আরোহণ এবং কলিঙ্গ যুদ্ধের গণহত্যার শোকে অস্ত্র-ত্যাগ।- প্রচলিত ইতিহাস-ভাষ্যের এই দুই বৈপরীত্য মিলবে কীভাবে? রহস্যাবৃত ঐ চতুর্বর্ষতেই উত্তর রয়েছে সব প্রশ্নের। বর্তমান আখ্যান মূলত ঐ চার বর্ষব্যাপী খণ্ডচিত্রগুলির কাহিনীরূপ। কিছু অনুমান, কিছু কল্পনা। তারই মাঝে এই মহান দ্বিমুখী ব্যক্তিত্বের কারণ অনুসন্ধানে এক গভীরতর রহস্যের উন্মোচন, কলিঙ্গ যুদ্ধ শেষে যা সম্রাটকে করেছে অকল্পনীয় বেদনায় দীর্ণ।
Magnapashan
A novel
Author : Surjonath Bhattacharya
Publishers : Suprokash