লোকায়ত ধর্মে নারীকে গুরুত্ব দেওয়ার যে সূচনাবিন্দু তাতে নদিয়ার ধর্ম ভীষণরূপে চিহ্নিত। নদিয়া যে পাঁচ-পাঁচটি লোকায়ত ধর্মের জন্ম দিয়েছে আঠারোর শেষ থেকে উনিশ শতকের প্রথমার্ধের সময়সীমায় সেখানেও আমরা দেখি নারীপ্রধান ধারণাটি বলবৎ থেকেছে। নদিয়া তার সহজিয়া স্রোতেও নারীকে শিরোধার্য করেছে। কর্তাভজা ধর্ম, লালনশাহী মত, সাহেবধনী, খুশিবিশ্বাসীদের সাধনায় ও কায়াসাধনে নারী হয়ে উঠেছিলেন অনন্যা, সম্মাননীয়া। পুরুষ পরওয়ারদিগারের শরীরে প্রকৃতির ছায়া দেখিয়ে ফকির লালন সাঁই নদিয়াকে যেন একাধারে নারী বা মাতৃকামণ্ডলের দিশা দিয়ে লিঙ্গ রাজনীতির বাইরে বের করে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি তো সাধন আধার হিসেবে সরাসরি ঘোষণাই করে দিয়েছিলেন, 'মায়েরে ভজিলে হয় তার বাপের ঠিকানা।'