Nasatyaputra
Nasatyaputra
নাসত্যপুত্র! নাসত্যদেবের আত্মজ, মহাভারতে যার পরিচয় চতুর্থ পাণ্ডব মাদ্রেয় নকুল। মহাভারতের বৃহৎ গাথার সমস্ত অধ্যায়ের মধ্যে বিরাজ করেও যে সর্বদা নীরব, উপেক্ষিত। স্বয়ং রচয়িতা ব্যাসদেবও এই মহাকাহিনির বেশিরভাগ অংশে যাঁর কণ্ঠে ভাষা দিতে বিস্মৃত হয়েছেন।। আর সবাইকে ছেড়ে হঠাৎ করে তাঁর জবানবন্দিতেই কেন সেই চিরপরিচিত মহাগাথার নব অবতারণা? আর কেনই-বা তাঁর আর সমস্ত পরিচিতিকে আড়াল করে এই কাহিনিতে সর্বপ্রথম উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে নাসত্যপুত্রের পরিচয়? নাসত্যপুত্র চতুর্থ পাণ্ডব, যে পঞ্চপাণ্ডবের একজন হয়েও মহাভারতের প্রায় সমস্ত অধ্যায় জুড়েই নীরব, উপেক্ষিত। শুধু এইটুকু শোনা যায়, তিনি নাকি পরম রূপবান ছিলেন, আর মহাপ্রস্থানের সময় তাঁর এই রূপের অহংকারই তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সত্যিই কী তাই, তাহলে বনবাসের পূর্বে স্বেচ্ছায় কেন নিজের সর্বাঙ্গে ভস্ম ধারণ করেছিলেন তিনি নিজের এই ইতিহাসপ্রসিদ্ধ সৌন্দর্যকে আড়াল করতে? আর কেমনই-বা ছিল তাঁর সঙ্গে বাকি চার পাণ্ডব, মাতা কুন্তী, অহংকারী রাজকুমার দুর্যোধন, এবং অগ্নিসস্থতা যাজ্ঞসেনী পাঞ্চালী অথবা তাঁর দ্বিতীয়া পত্নী শিশুপালদুহিতা রাজকুমারী করেণুমতীর সম্পর্কের রসায়ন? কেন তাঁর বিষয়ে কথা বলতে গিয়েও বারংবার শুধু নীরবতাকেই অবলম্বন করেছেন মহাভারতের রচয়িতা? তাঁরও কিছু বলার থাকতে পারে, থাকতে পারে তাঁর নিজের জীবন নিয়ে, সেই সময়কার আর্যাবর্তের রাজনীতির মঞ্চ ও ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক শক্তির সমীকরণ নিয়ে কোনো অপ্রত্যাশিত বক্তব্য! আপাতদৃষ্টিতে অন্তর্মুখী, নীরব ব্যক্তিদের জগৎসংসার সম্পর্কে উদাসীন মনে হলেও, সেই উপেক্ষিতরাই সবার অজান্তে যে শ্রেষ্ঠ পর্যবেক্ষক হয়ে উঠতে পারে না, তাই-বা কে বলতে পারে? কে জানে জানা ইতিহাসে কোন অজানা রূপ জীবন্ত হয়ে উঠতে পারে তাঁদের মনের গহিন ঘরে একটি বার উকি দিলে? মহাভারতের সেই আদি রাজনীতির মঞ্চকে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করতে এবং নিজের অকথিত অন্তরবার্তাকে আরও অজস্র মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে মিথিল ভট্টাচার্য্যের 'পরাহত ভাগ্যনায়কের' উত্তরসূরি 'নাসত্যপুত্র'।
Nasatyaputra
A Novel
Author : Mithil Bhattacharya
Publishers : The Cafe Table