শ্মশান তো কেবল মৃতদেহ দাহের স্থান নয়- শ্মশান আমাদের নিভৃত ব্যথার সঙ্গীও। আমাদের প্রিয়জন মারা গেলে অসীম শূন্যস্থান তৈরি হয়। প্রিয়জন যতই প্রিয় হোক-না-কেন মৃত্যুর পর তাকে দাহ করা হয়। আর শ্মশানবাড়ি সেই উপত্যকা যেখানে মানুষ উবে যায়, নেই হয়ে যায়। সুতরাং শ্মশানের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হলে আমাদের আরও গভীরে যেতে হবে। তার জন্য কেবল গ্রন্থ পড়লে হবে না- পড়তে হবে মানুষকে। মানুষের অজস্র স্মৃতিজড়ানো মুহূর্তকে। তাকে ধরে রাখতে গেলে আমাদের সব অলংকার খুলে রেখে প্রবেশ করতে হবে সেই দুঃখবিহবল শোকের ভেতর। ফলে তখন থেকে শুরু হল অন্য পরিক্রমা, অন্য অভিযাত্রা। সেই অভিযাত্রায় কেবল মানুষের গল্প। মানুষের শোক, বিষাদ, ব্যর্থ অশ্রুর গল্প। সেই মুহূর্তটুকুকে বুঝবার জন্য দিনের পর দিন রাতের পর রাত শ্মশানে প্রিয়জন হারানো মানুষের কাছে গিয়ে কাঙালের মতো দাঁড়িয়েছি। প্রাণপণে অশ্রুর রঙ বুঝবার চেষ্টা করেছি। সেই যাপনের ফলশ্রুতিতে শ্মশানের উঠোনে দাঁড়িয়ে তৈরি হয়েছে এই গ্রন্থের একটার পর একটা অক্ষর নির্মাণ।