যুগের পর যুগ ধরে বিস্ময় ও কৌতূহল উদ্রেককারী পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্যে বসবাসকারী রয়াল বেঙ্গল টাইগার এই বাদাবনকে অতুলনীয় করে রেখেছে। দুনিয়ার বাকি সব জঙ্গলে বাঘ দেখার সুযোগকে একদিকে আর সুন্দরবনের বাঘ দেখতে পাওয়ার সৌভাগ্যকে অন্যদিকে রাখলে নিশ্চিন্তে সুন্দরবনের পাল্লাই ভারি হবে। স্বভাবতই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বাদাবনের বাঘকে ঘিরে তৈরি হয়েছে অসংখ্য মিথ, অজস্র কাহিনি। তার পাশাপাশি মানুষের মনে জেগে ওঠা নানান প্রশ্ন, যার জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা, নিরীক্ষণ, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা হয়ে চলেছে নিরন্তর। যেমন সুন্দরবনের প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে মানিয়ে নিয়ে জীবন কাটাচ্ছে বাঘেরা? কীভাবে তারা ভারতীয় উপমহাদেশের বাকি বাঘদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল? এই বিচ্ছিন্নতা কি বাঘের আকার, আকৃতি, স্বভাবে কোনো বিশেষ পরিবর্তন এনেছে? কেমন তাদের খাদ্যাভাস? সুন্দরবনের বাঘ কি স্বভাবগতভাবে মানুষখেকো? বাঘের জঙ্গলের একেবারে পাশেই এমন ঘন মনুষ্যবসতি পৃথিবীর খুব কম অরণ্যেই দেখা যায়। একদিকে যেমন জঙ্গল কেটে মানুষের বসতি বেড়েছে, অন্যদিকে বেড়েছে জলের লবণাক্ততা। এই দুইয়ের চাপে অস্তিত্বের লড়াইয়ে মানুষের সঙ্গে সহাবস্থানের এক আশ্চর্য সমীকরণ ও দর্শন সুন্দরবনের বাঘকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প অরণ্য সংলগ্ন মানুষের সঙ্গে বাঘের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কতটা অর্থবহ প্রভাব ফেলেছে? গভীর জঙ্গলে গিয়ে কিংবা সংলগ্ন গাঁয়ে মানুষ যখন রয়াল বেঙ্গল টাইগারের সম্মুখীন হন তখন তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন? ভারত ও বাংলাদেশ- প্রতিবেশী দুই দেশের লেখনি ও রঙীন ছবিতে সমৃদ্ধ এই অনন্য সংকলনটিতে মিলবে বাদাবনের 'বড়ে মিঞা'কে নিয়ে হাজারো প্রশ্নের উত্তর।