ঐতিহাসিক ঘটনাকে কখনো বদলানো যায় না। বদলাতে হলে অতীত কালের গর্ভে ফিরে গিয়ে আবার নতুন করে চেষ্টা করতে হয়। মানবজাতির দুর্ভাগ্য কিংবা সৌভাগ্যই বলতে হবে যে, অতীতের মধ্যে সে শত প্রয়াসেও ফিরে যেতে পারে না। তাই যে ঘটনা ঘটে গেছে, সে ঘটনার ইতিবৃত্ত অটুট থাকে-এতটুকু নড়চড় হয় না।
অতীত ভারতের কুয়াশাচ্ছন্ন ইতিহাসের অস্পষ্টতার মধ্যে যে কয়টি আলোকস্তস্ত দৃশ্যমান হয় মগধ নিঃসন্দেহে তাদের মধ্যে উজ্জ্বলতম। সাধারণভাবে আধুনিক যুগের বিহার প্রদেশের একটি অংশ নিয়ে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন মগধ রাজ্য যা কালক্রমে তার সীমারেখা অতিক্রম করে বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছিল। এই রাজ্যের প্রাচীনতম রাজধানীর নাম ছিল গিরিব্রজ, কালক্রমে যার পরিবর্তিত নামকরণ হয়েছিল রাজগৃহ। এ যুগের রাজগীর। রাজগৃহ থেকে পরবর্তীকালে রাজধানী স্থানান্তরিত হয় পাটলিগ্রাম বা পাটলিপুত্রে। এ যুগের পাটনা। রাজধানী রাজগৃহের নিরাপত্তার কথা ভেবেই অজাতশত্রুই সর্বপ্রথম পাটলিপুত্রের স্থানটির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন।
মগধ রত্নগর্ভা। এই দেশ হ'ল ইতিহাসের স্বর্ণখনি। সেই স্বর্ণ আহরণে প্রবৃত্ত হয়েই "রাজগৃহ পর্ব" এবং "পাটলিপুত্র পর্ব" পাঠকবর্গের হস্তে তুলে দিয়েছিলেন লেখক শ্রীপারাবত।
শেষ উপন্যাসটির নাম "মহম্মদ-বিন-তুঘলক"-ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক উজ্জ্বলতম নাম। তাঁর ইতিহাস পড়লে পাঠককুল এক অভূতপূর্ব রোমাঞ্চ অনুভব করবেন। মহম্মদ-বিন-তুঘলকের পিতামহ মালিক তুঘলককে তুরস্ক থেকে বলবন্ ক্রীতদাস হিসাবে সঙ্গে এনেছিলেন। তাঁরই পুত্র গিয়াসউদ্দিন তুঘলক আলাউদ্দিন খিলজির আমলে এক উচ্চস্থানে আসীন হয়েছিলেন এক অসাধারণ সমর বিশারদরূপে। তাঁরই পুত্র ফকরুদ্দিন জউনা ওরফে মহম্মদ-বিন-তুঘলক। তাঁকে নিয়েই এই উপন্যাসটি পিতার লেখনীতে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।